টেক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালুর অনুমোদন পেতে যাচ্ছে ইলন মাস্কের স্টারলিংক। জরুরি প্রয়োজনে সরকারকে সহযোগিতা করা, দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যান্ডউইথ কেনাসহ বেশ কিছু শর্ত মেনে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) স্টারলিংককে লাইসেন্স দিতে প্রস্তুত। চলতি সপ্তাহে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া শুরু করবে বিটিআরসি।

স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ 

 ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার ওপরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্টারলিংকের প্রায় ৭ হাজার স্যাটেলাইট রয়েছে, যা বাসাবাড়ি, অফিস কিংবা দুর্গম অঞ্চলে সরাসরি ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করে। একটি স্টারলিংক কিট বা অ্যান্টেনার মাধ্যমে গ্রাহকরা সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ২২০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন

 

বিটিআরসির প্রস্তাবিত নীতিমালায় স্টারলিংকের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রাখা হয়েছে— লাইসেন্স আবেদন ফি ৫ লাখ টাকা। রাজস্ব ভাগাভাগির হার ৫.৫ শতাংশ। দেশে নিজস্ব আর্থ স্টেশন স্থাপন। স্থানীয় ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যান্ডউইথ কেনা। বিটিআরসি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শর্ত মেনে চলা।  বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, 'আমরা মন্ত্রণালয়ে গাইডলাইন পাঠিয়েছি। সেখান থেকে মতামত চাওয়া হয়েছে, যা আমরা এ সপ্তাহেই পাঠিয়ে দেবো। সরকার অনুমোদন দিলে লাইসেন্স দেওয়া সম্ভব হবে।'  

স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পেতে গ্রাহকদের একটি কিট কিনতে হবে, যার দাম ৪১ হাজার ৮৮০ টাকা থেকে ৭১ হাজার ৮৮০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের মাসিক ফি গুনতে হবে প্রায় ১২০ ডলার বা ১৪,৫০০ টাকা, যা স্থানীয় ব্রডব্যান্ড সেবার তুলনায় অনেক বেশি।  

বর্তমানে দেশে মাত্র ৫০০ টাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায়। স্টারলিংকের উচ্চমূল্যের কারণে গ্রাহক চাহিদা কতটা থাকবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সন্দিহান।  

আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (আইআইজিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, 'আমরা যে পরিমাণ ভ্যাট দিচ্ছি, স্টারলিংককেও একই পরিমাণ ভ্যাট দিতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনুরোধে আমরা যেভাবে তথ্য সরবরাহ করছি, স্টারলিংকের জন্যও একই নিয়ম কার্যকর থাকা উচিত।'

বর্তমানে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। বাংলাদেশে অনুমোদন পেলে এটি দেশের ডিজিটাল সংযোগে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।


 

Post a Comment

Previous Post Next Post